স্বাস্থ্যপদ স্যুপ ও কুশল
স্যুপের কিছুটা নিরাময়ী শক্তি আছে তা স্বীকার করছেন বিজ্ঞানীরা এবং দাদা-দাদিরাও। শরীরের বাড়তি ওজন কমানো থেকে শুরু করে ভেতর থেকে বাইরে শরীরকে উষ্ণ করা, দেহ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উজ্জীবিত করা, শীতের জন্য স্যুপ বড় স্বাদু ও স্বাস্থ্যকর পানীয়।
পুরোনো চীনা প্রবাদ এ রকম—একজন ভালো ডাক্তার প্রথম পথ্য দিয়ে চিকিৎসা করেন, এরপর প্রয়োগ করেন ওষুধ। নিরাময়ী এই স্যুপ হতে পারে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রথম পদক্ষেপ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্যও বটে। কম উত্তাপে ধীরে ধীরে খাদ্য প্রস্তুত করলে রক্ষা পায় খাদ্যের পুষ্টিগুণ, তা সহজপাচ্য হয়ে ওঠে, শরীরে শোষিতও হয় ভালো।
দেহের প্রতিরোধ শক্তি উজ্জীবনী স্যুপ
আমাদের দেহ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য চাই প্রচুর খনিজ দ্রব্য, যাতে শরীর কর্মক্ষম থাকে। খুব বেশি কড়া জ্বালে সবজির গুণ অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়, তাই কম জ্বালে রান্না করা সবচেয়ে ভালো।
ফুটান আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা বাঁধাকপি, গাজর, টাটকা আদা, পেঁয়াজ, মাশরুম, স্কুয়াশ, সি ফুড এবং চিকেন বা সবজি স্টক ফুটান আধ থেকে এক ঘণ্টা ধরে। বাঁধাকপি বাড়ায় দেহ প্রতিরোধ ক্ষমতা, আদা পরিপাকে সাহায্য করে, সি ফুড দেহকে মালিন্যমুক্ত করে। মাশরুমে আছে পুষ্টি উপকরণ, যা দেহ প্রতিরোধে শক্তি বাড়ায়। অন্যান্য উপকরণ শরীরের সাধারণ স্বাস্থ্য ভালো করে। শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর দেহ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলার জন্য এই স্যুপ প্রতিদিন খাওয়া ভালো।
শীতে শরীর গরম করা হূদয়হরা স্যুপ
ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে সঙ্গে স্যুপের ধরন একটু পাল্টায়, শীতের সময় হট স্যুপ প্রস্তুত করা মানে যেন শক্তি উৎপন্ন করা। তাই স্যুপে যোগ করা যায় লিকস (পেঁয়াজের কন্দের মতো তরকারি), পেঁয়াজ, পালংশাক, ওলকপি, ব্রকোলি, স্কোয়াশ, আদা, পারসলি—সঙ্গে একটু হলুদের গুঁড়া। রক্ত চলাচল ভালো হবে।
দেহের মালিন্য মুক্ত করার স্যুপ
তরল স্যুপ এমনিতে দেহ থেকে বর্জ্য বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। শরীরকে আরও পরিচ্ছন্ন, ভেতর থেকে ঝকঝকে তকতকে করতেও স্যুপের জুড়ি নেই। বাড়ে রক্ত চলাচল, প্রদাহ কমে, প্রয়োজনীয় খনিজ যায় শরীরে। এক থেকে দুই ঘণ্টা কম জ্বালে ফোটানো যায়—ব্রাসেলস স্পাউট, বাঁধাকপি, মৌরিপাতা, হলুদ ফুলবিশিষ্ট ফেনল, রসুন, টাটকা আদা, লিকস, মাশরুম, সর্ষে শাক, কচি মুলা, সি উইড, হলুদ, শাপলা। স্যুপ গরম গরম খান। আরও অনেক রেসিপি তৈরি করা যায় ভেবেচিন্তে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলম থেকে
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৮, ২০১২
Comments 0