ধনেপাতা দিয়ে পানির আসেনিক দূষণ কাটানো উপায় আবিষ্কার
arsenic
সারা পৃথিবীতে ১০০ কোটিরও বেশি লোক নিরাপদ খাবার পানি পায় না। বিশেষ করে খাবার পানিতে আরসেনিক, সীসা বা পারদের মতো ভারী ধাতব পদার্থের যৌগ মিশে গিয়ে যে দূষণ হয় - তা অত্যন্ত মারাত্মক। এ থেকে যে শুধু ক্যান্সারের মতো নানা রকম রোগ দেখা দিতে পারে তাই নয়, দীর্ঘকাল ধরে আর্সেনিক, সীসা বা পারদে দূষিত পানি পান করলে তা মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
পানি থেকে এই বিপজ্জনক ধাতব পদার্থগুলো অপসারণ করার একটি উপায় হলো কার্বন ফিল্টারিং - কিন্তু দরিদ্র দেশের জন্য এ পদ্ধতিগুলো অত্যন্ত ব্যযবহুল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক দল গবেষক পানিকে আর্সেনিক, সীসা বা পারদের দূষণমুক্ত করার এমন এক উপায় আবিষ্কার করেছেন যা রীতিমত বিস্ময়কর রকমের সহজ।
গবেষকদের একটি দল মেক্সিকো সফর করে বিভিন্ন গাছপালার ভেষজগুণ পরীক্ষা করে শেষ পর্যন্ত আবিষ্কার করেছেন আমাদের অতি পরিচিত ধনিয়া বা কোরিয়ান্ডার, স্প্যানিশ ভাষায় যাকে বলে সিলান্ত্রো – তার পাতার বিস্ময়কর ক্ষমতা আছে পানি থেকে এই বিপজ্জনব ধাতব পদার্থগুলো শোষণ করে নেবার।
যুক্তরাষ্ট্রের আইভি টেক কমিউনিটি কলেজের রাসায়নিক প্রযুক্তির অধ্যাপক ডগলাস শাওয়ার এই গবেষকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলছেন, "পাতার এই শোষণ ক্ষমতাকে বলে বায়ো-এ্যাবজর্পশন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি কিভাবে ধনেপাতা এই কাজটা করে। ধরুন, আপনার সামনে আছে একটি পাত্রে রয়েছে আর্সেনিক, সীসা বা পারদে দূষিত পানি। আপনি কিছু ধনেপাতা সেই পানিতে ছেড়ে দিন। ধনেপাতার যে কোষগুলো - তার দেয়ালটা হয় খসখসে ধরণের এবং তা সেই ভারী ধাতব কণিকাগুলো শোষণ করে নেয়। তার পর আপনি ধনেপাতাগুলো তুলে নিন, তার সাথে সেই সব ধাতব অণুগুলোও পানি থেকে চলে যাবে।"
ড: শাওয়ার তাদের গবেষণার এই ফলাফল উপস্থাপন করেছেন গত সপ্তাহেই আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির সভায়। বাংলাদেশ বা ভারতের মতো যেসব দেশে খাবার পানিতে আর্সেনিক দূষণ অনেক জায়গাতেই একটি বড় সমস্যা – হয়তো তার একটা সহজ সমাধান এই গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।
এবারের বিজ্ঞানের আসর পরিবেশন করেছেন পুলক গুপ্ত।
Comments 2