জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ নতুন এক ধরণের ওষুধ তৈরির এক গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছে ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান এ্যাস্ট্রাজেনেকা। বলা হচ্ছে এর ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগ আর ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে।
এর ফলে ডাযাবেটিস, হৃদরোগ এবং অনেক ধরণের ক্যান্সারের চিকিৎসায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি ঘটবে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন।
এমন এক পদ্ধতিতে এই ওষুধ তৈরির গবেষণা চলছে যা আগে কখনো হয়নি। ক্রিস্প-আর নামের এই পদ্ধতিতে মানবদেহের জিনের যে উপাদানগুলো এক একটি বিশেষ রোগ সৃষ্টি করে - তা আলাদা করে তার ওপর ওষুধগুলো কাজ করে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
Crispr ক্রিস্পআর প্রযুক্তি
বিবিসির বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদদাতা পল্লব ঘোষ বলছেন, "আপনি একটা আইভি ফুলের লতার কথা চিন্তা করুন। মনে করুন, পুরো লতাটা হচ্ছে যেন একটা ডিএনএ, আর এর পাতাগুলো যেন এক একটা জিন। যখন এই পাতাগুলোর একটা - অর্থাৎ একটা জিন - খারাপ হয়ে যাচ্ছে, তখনই আপনি কোনো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন এই গবেষণা প্রকল্পটার লক্ষ্য হলো - এই লতাগাছটা থেকে নষ্ট হওয়া পাতাটি কেটে নেবার মতনই, ডিএনএ থেকে এই ত্রুটিপূর্ণ জিনগুলো কেটে বের করে নেয়া, এবং তার ওপর এক একটা ওষুধ প্রয়োগ করে পরীক্ষা করে দেখা - যে ঠিক কোন্ ওষুধটা আপনার রোগ সারাতে পারে।"
"বিজ্ঞানীরা এই কাজটা করার জন্য এমন কতগুলো অণু তৈরি করেছেন যা একটা ডিজিটাল কাঁচি বা ছুরির মতো করে কাজ করবে, ওই রোগাক্রান্ত জিনটাকে কেটে বের করে আনতে পারবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো নতুন এই প্রযুক্তিটি সস্তা এবং খুব দ্রুত কাজ করে।"
এ্যান্ট্রাজেনেকা এই গবেষণা করছে ওয়েরকাম ট্রাস্ট স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের সাথে। এতে ২০০০ সালের মানব জিনোম প্রকল্প থেকে মানব জিনের গঠন সম্পর্কে যেসব তথ্য জানা গেছে তাই এতে ব্যবহার করা হবে।
Astrazeneca এ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষণাগার
এটা প্রয়োগ করে বিজ্ঞানীরা একটি দেহকোষের মধ্যে থাকা জিনগুলোকে বেছে নিয়ে তাতে কাটছাঁট বা পরিবর্তন করতে পারেন।
এই ক্রিস্প-আর প্রযুক্তি সম্পর্কে এবারের বিজ্ঞানের আসরে কথা বলেছেন ভারতের বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের মলিকিউলার বায়োফিজিক্সএর অধ্যাপক ড. দীপংকর চ্যাটার্জি।
তিনি বলছেন, ক্রিস্পআর প্রযুক্তিটি আবিষ্কৃত হয়েছে বছর দুয়েক আগে, এবং এটি এতই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার যে এর উদ্ভাবকরা শিগগীরই নোবেল পুরস্কার পাবেন এমন কথাও বলা হচ্ছে।
মানুষ হাতিয়ার ব্যবহার শুরু করেছিল কবে?
মানুষের ব্যবহৃত সবচেয়ে পুরোনো হাতিয়ার যা পাওয়া গেছে তা মোটামুটি ২৫ লাখ বছর আগের।
কিন্তু এক নতুন গবেষণার পর বলা হচ্ছে আসলে হয়তোতার অনেক আগেই প্রাচীন মানুষ হাতিয়ার ব্যবহার শুরু করেছিল।
Neanderthal নিয়ানডার্থাল মানবের অস্থি
সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে প্রায় ২৫ লাখ বছর আগে পৃথিবী প্রথম মানবজাতির উদ্ভব হয় - যারা দু পায়ের ওপের হাটতে পোরে।
মানুষ যে তাদের মতো অন্য প্রজাতির প্রাণী যেমন বানর, গরিলা বা শিম্পঞ্জীর চাইতে শ্রেষ্ঠ - তার একটা বড় কারণ হলো তাদের হাতের আঙুলের গঠন - যা দিয়ে তারা অনেক বেশি দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে, উন্নত ধরণের যন্ত্র বানাতে পারে।
যুক্তরাজ্যের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ট্রেসি কিভেল এমন একটা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যা দিয়ে মানুষের পূর্বপুরুষদের হাতে হাড়ের গঠন বিশ্লেষণ করা যায় - এবং তা দিয়ে তিনি দেখতে পেয়েছেন যে মানুস প্রথম হাতিয়ার ব্যবহার শুরা করেছিল আমরা যা অনুমান করি তার অনেক আগেই।
ড. কিভেল মনে করেন, মানুষের হাড়ের গঠনের এই পরীক্ষা প্রাচীন মানুষ সম্পর্কে গবেষণায় আরো নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে
Comments 0