বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর কেননা এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই এক দিকে মুসলমানেরএকটা গ্র“প যেমন বিপথগামী হয়ে গেছে ও চরমপন্থা অবলম্বন করেছে।ঠিক তেমনি অমুসলিমদের একটা গ্র“প এ বিষয়টিকে কেন্দ্রকরে ছলচাতুরী ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। ইসলামকে কলুষিত করার ব্যথ চেষ্টা চালিয়েছে এবংতারা নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার মানষে বলেফেলেছে যে, জিহাদ এক মহা সন্ত্রাসএবং ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি।
ইসলাম ও মুসলমানগণ বর্তমান বিশ্বে বিধর্মীদের পক্ষ থেকে তিন ধরনের হামলার শিকার হচ্ছে। প্রথমটি হচ্ছে যে, তারা সশস্ত্রআক্রমণের শিকার হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন জনপদগুলোর উপর বিমান আক্রমণ ও বোমা নিক্ষেপ করেধ্বংস ও তছনছ করে দেয়া হচ্ছে। অসংখ্যা জান ও মালের ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে তাদের প্রতি পরিকল্পিতভাবে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন করা হচ্ছে..................।
আর তৃতীয়টি হচ্ছে বুদ্ধি বৃত্তিক আক্রমন যার মাধ্যমে তারা ইসলামের অসারতা প্রমাণকরার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসলামের উপর বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে যেমন-ইসলাম সেকেলে একটি ধর্ম এখানে প্রগ্রেসিভ বলতে কিছু নেই, ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম এবংতা তরবারীর সাহায্যে বিস্তৃত হয়েছে। ইসলাম নারীকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ইসলামেমানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
মূলতঃ উক্ত সকল ধরণের আক্রমনের প্রতিহত করাই জিহাদ। ২য় ও ৩য় প্রকারের আক্রমনএককভাবে মুকাবিলা করা যায় কিন্তু প্রথম প্রকারের আক্রমন এককভাবে মুকাবিলা সম্ভব পরনয়।তা দলবদ্ধভাবে মুকাবিলা করতে হবে।
কিন্তু তা কোন পদ্ধতিতে হবে সেটাই মূলতঃ আজকের আলোচনার মূল বিষয় বস্তু। আরএটাকে কেন্দ্র করেই মূলতঃ মুসলমানের একটা অংশ চরমপন্থা অবলম্বন করে ফেলেছে।
জিহাদের অর্থ : জিহাদ শব্দ যে ধাতু থেকে এসেছে তার অর্থ চেষ্টা, সাধনা, সংগ্রাম ও লড়াই এবং শরীয়তের পরিভাষায়জিহাদ হচ্ছে আল্লাহর পথে সমস্ত সাধ্য-সাধনা ও চেষ্টাকে নিবেদিত করা এবং প্রয়োজনে আল্লাহরকালিমাকে সমুন্নত রাখার মহান লক্ষ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে লড়াই করা।
জিহাদের হুকুম ও শর্ত : আল্লাহ তা‘আলার ২য় হিজরীতেনিম্ন বর্ণিত আয়াতের মাধ্যমে মানব জাতির উপর জিহাদ ফরয করেন :
{كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ -الآية} (سورة البقرة : ২১৬)
অর্থাৎ “তোমাদের উপর জিহাদ ফরয করা হলো যদিও তা তোমাদের নিকট অপছন্দনীয়।”
তবে উক্ত ফরয ফরযে কিফায়াহ। অর্থাৎ সমস্ত মুসলিম মিল্লাতের উপর জিহাদ ফরয তবেকিছু সংখ্যক লোক তা পালন করলে সকলের পক্ষ থেকে উক্ত ফরয আদায় হয়ে যাবে। আর যদি কেউউক্ত ফরয আদায় না করে তবে গোটা উম্মত গুনাহগার হবে।
তবে নিম্ন বর্ণিত তিনটি অবস্থার সময় জিহাদ ফরযে আইন অর্থাৎ নির্দিষ্ট ব্যক্তিরউপর জিহাদ ফরয হয়ে যায়।
১. কোন ব্যক্তি যদি যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত থাকে তবে তার প্রতি জিহাদ ওয়াজেবহয়ে যায়। (সূরা আনফাল : ১৫,৪৫)
২. যখন শত্র“ পক্ষ মুসলমানদের কোন শহরে প্রবেশ করে ফেলবে তখন উক্তশহরবাসীর সকলের প্রতি জিহাদ ওয়াজিব বা ফরয হয়ে যাবে। (সূরা তাওবাহ : ১২৩)
৩. যখন বাদশাহ অথবা সেনাপতি নির্দিষ্ট কোন ব্যাক্তিকে জিহাদের ময়দানে তলব করবেনতখন উক্ত ব্যক্তির উপর জিহাদে অংশ গ্রহণ ওয়াজিব হয়ে যাবে। (সূরা তাওবাহ : ৩৮)
তবে মুজাহিদকে অবশ্যই মুসলিম, বিবেক সম্পন্ন, প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শারীরিক সক্ষমতবানহতে হবে।
জিহাদ ফরযের বিভিন্ন স্তরসমূহ :
১. জিহাদ থেকে বিরত থাকার আদেশ। (সূরা নিসা : ৭৭)
২. বাধ্যতা মূলক বিহীন লড়াই করার অনুমতি প্রদান। (আল হাজ্জ : ৩৮-৪০)
৩. শুধু তাদের বিরুদ্ধে লড়াই যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে।(সূরা নিসা : ৯০-৯১)
৪. শক্তি অর্জন করলে সকল কাফেরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া যতক্ষণ না তারাজিযিয়া তথা কর দিতে সম্মতি না দিবে। (সূরা তাওবাহ : ৫)
জিহাদের স্তরসমূহ :
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন জিহাদের স্তর ৪টি :
১. নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করা।
২. শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ করা।
৩. কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা।
৪. মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা। (যাদুল মায়াদ ৩য় খণ্ড পৃঃ ৯-১০)
জিহাদের পদ্ধতি :
* একটি রাষ্ট্রের পুরো ভূখন্ডে শুধুমাত্র রাষ্ট্র প্রধানের নেতৃত্বে অথবা তারসম্মতিতেই জিহাদ সংগঠিত হতে হবে। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যুগেতাঁর আদেশ বা তাঁর সম্মতি ছাড়া কোন একটি যুদ্ধও সংগঠিত হয়নি। কোন একজন সাহাবী বিক্ষিপ্তভাবেজিহাদ করেছেন তার কোন প্রমাণ নেই।
* যুদ্ধ শুরুর আগে অবশ্যই প্রতিপক্ষের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
* যুদ্ধকালীন সময় কেউ যদি ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দান করে তা নির্দ্বিধায় মেনেনিতে হবে।
* কোন বৃদ্ধ, নারী ও শিশুকে হত্যাকরা যাবে না।
জিহাদকালীন সময়ে মুজাহিদের জন্য যা অবশ্য পালনীয় :
১) সাহসিকতার সাথেজমে লড়াই করা, পলায়ন না করা
২) আল্লাহও তাঁর রসূলেরপূর্ণ আনুগত্য বজায় রাখা
৩) আমীর তথা সেনাপতিরকথা মান্য করা।
৪) গানীমতের মালে খিয়ানত না করা।।
জিহাদের ফযীলত :
আল কুরআনের আলোকে : মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَالْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِفَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِيالتَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَاللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِيبَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ [٩:١١١]
আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَالَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَىالْأَرْضِ ۚ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَامِنَ الْآخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَافِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ [٩:٣٨]
হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প।
إِلَّا تَنفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًاأَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ [٩:٣٩]
যদি বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদের মর্মন্তুদ আযাব দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন। তোমরা তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।
সূরা তাওবা ৩৮-৩৯
আরো ইরশাদ হচ্ছে :
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِيسَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنْيَانٌ مَّرْصُوصٌ [٦١:٤]
আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।
সূরা আস-সউফ ৪
ইরশাদ হচ্ছে :
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِالْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ ۚ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ [٩:٧٣]
হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।
সূরা তওবা ৭৩
হাদীসের আলোকে : রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন :
رباط يوم فيسبيل الله خير من الدنيا وما عليها (متفق عليه)
আল্লাহ পথে একদিন সীমান্ত প্রহরাদুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যকার মসস্ত জিনিস হতে উত্তম।
তিনি আরো বলেন :
ما اغبرتقدماعبد في سبيل الله فتمسه النار
যে বান্দার পদদ্বয় আল্লাহর পথেঅর্থাৎ জিহাদে ধুলা ধূসরিত হয় তাকে হাজান্নামের অগ্নি স্পর্শ করবে না। (বুখারী)
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন :
الجنة تحت ظلالالسيوف (متفق عليه)
তলোয়ারের ছায়াতলেই রয়েছে জান্নাত।
তিনি আরো বলেন :
ذروة سنامالإسلام الجهاد
দ্বীন ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া হচ্ছেজিহাদ। (তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ ও অন্যান্য জঙ্গী সংগঠন
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পৃথিবীর যে কোন ভূখণ্ডেই অবৈধ ও গর্হিত কাজ। কিন্তু বাংলাদেশেরমত ভূখণ্ডে যেটা মহা বিস্ময়কর। কেননা এখানে জিহাদ বা যুদ্ধ কার বিরুদ্ধে? মুসলমান হয়েমুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ? তাদের ঈমান, আক্বীদা ও আমলে কিছু ত্র“টি থাকতেই পারে সে জন্য দাওয়াত ও তাবলীগের বিধান রাখা হয়েছে। যার মাধ্যমে তাদেরকেসিরাতে মুস্তাকীমের পথে আহ্বান করতে হবে। হিদায়তে প্রাপ্ত হলে আল-হামদুলিল্লাহ। নইলেআপনার দায়িত্ব শেষ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা তার প্রিয় হাবীবকেবলেছেন : আপনার উপর তো কেবল পৌছানোর দায়িত্ব আর হিদায়েত দান করার মালিক তো কেবল মাত্রআমি।
সিনেমা দেখা অবশ্যই অন্যায় কাজ তবে তা নিশ্চয় এ পর্যায়ের নয় যে তাকে হত্যাকরতে হবে। তবে আপনি কোন যুক্তিতে বোমা মেরে সিনেমা হল উড়িয়ে দেবেন? আপনি কি নিম্নবর্ণিতআয়াত পড়েননি;
وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًافَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُوَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا [٤:٩٣]
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।
সূরা নিসা ৯৩
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
مِنْ أَجْلِ ذَٰلِكَ كَتَبْنَا عَلَىٰبَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِيالْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَاأَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا ۚ وَلَقَدْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُنَابِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم بَعْدَ ذَٰلِكَ فِي الْأَرْضِلَمُسْرِفُونَ [٥:٣٢]
এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।
সূরা মাইদা ৩২
আপনি হয়ত বলবেন আল্লাহ তা‘আলা ঐ সমস্ত লোককেকাফির বলেছেন যারা ইসলামী শরীয়ত মুতাবেক বিচার কার্য করে না। কিন্তু আল্লাহ তো আরোদুটি আয়াতে তাদেরকে জালিম ও ফাসিক ও বলেছেন। সুতরাং পার্থক্য বুঝতে হবে।
আর তা হলো যারা অন্তর দিয়ে ইসলামকে ও ইসলামী আইনকে ঘৃণা করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যজানে আল্লাহ তাদেরকে কাফির বলেছেন।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মাননীয় বিচারপতিগ ইসলামের প্রতি এ ধরণেরখারাপ ধারণা পোষণ করেন না। আর তারা তো মূলতঃ বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বিচারকার্যপরিচালনার ব্যাপারে শপথ গ্রহণ করেছেন। এবং বাংলাদেশের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার তাদেরকোন সুযোগ নেই।
সন্ত্রাস মুক্ত বিশ্ব বিনির্মানের ইসলাম ন্যায় বিচারের উপর সবচাইতে গুরুত্বআরোপ করেছে।
ইসলাম জাতি, ধর্ম, বর্ণ তথা সাদাকালো, ধনী দ্ররিদ্রের ভেদাভেদ স্বীকার করেনা বরং সর্বক্ষেত্রে আইনের স্বীকৃতি দিয়েছে ও বিচার ব্যবস্থায় বিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিতকরেছে।
আল্লাহ বলেন :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُواقَوَّامِينَ لِلَّهِ شُهَدَاءَ بِالْقِسْطِ ۖ وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍعَلَىٰ أَلَّا تَعْدِلُوا ۚ اعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَىٰ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَاتَعْمَلُونَ [٥:٨]
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।
সূরা মাইদা ৮
জিহাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
1. আল্লাহর দ্বীনকে সমুন্নত রাখা
2. ইসলামের দাওয়াতের সংরক্ষণ
3. নতুন এলাকা ও রাষ্ট্র বিজয়ের মাধ্যমে ইসলামের সম্প্রসারণ
4. আল্লাহর আইনের বাস্তবায়ত ও ইসলামী বিধান চালু
5. মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদের আগ্রাসনের প্রতিহতকরণ
6. আল্লাহর পথে শাহাদাত অর্জনের পরম সৌভাগ্য লাভ।
7. মুসলমানের মাঝে ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টি
8. কাফিরদের ক্ষতি সাধন থেকে ইসলামী রাষ্ট্রকে সংরক্ষণ
9. মুনাফিকদের চিহ্নিতকরণ যেহেতু তারা যুদ্ধকে এড়িয়ে চলে
10. মুমিনগণ পাপ থেকে ম্ুিক্ত লাভ করেন
11. ধৈর্যের সাথে সর্বাবস্থায় ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকারএক প্রশিক্ষণ অর্জন।
12. গনীমতের মাল ও বন্দী অর্জন।
13. দুবল ও অসহায় মুসলমানদের সাহায্য ও হিফাজত।
14. ইসলাম ও মসলমানদের বিরুদ্ধবাদী শক্তিকে নির্মূলকরণ
15. আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসা ওনৈকট্য অর্জন হয়
16. ঈমান পরিপূর্ণ হয়ে যায়
17. জান্নাতে ঈর্ষণীয় বিশেষ মর্যাদা লাভ
সন্ত্রাস দমনে কুরআনের ভূমিকা
যে বিষয়টি নিয়ে আজে বিশ্বেমানবতা ভীত-সন্ত্রস্ত গোটা বিশ্ব শঙ্কিত সেটা হচ্ছেসন্ত্রাস, সন্ত্রাস মানে ভয়, শঙ্কা ও ভীতি ও হয়রানী ইত্যাদি। নানা রকম অত্যাচার অবিচার,হত্যা, ছিনতাই ইত্যাদির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাখার নামই সন্ত্রাস। ইসলামইএকমাত্র ধর্ম যে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছে।
সন্ত্রাস মুক্ত বিশ্ব বিনির্মানে ইসলামের অবদান বিশ্বে সর্বাধিক নিচে তার কিছুনমুনা পেশ করা হল :
· ইসলাম বিশ্ব মানবতার ধর্ম, মানবতা বিরোধী সন্ত্রাসকেইসলাম কঠোরভাবে না বলেছে
আল্লাহ বলেন :
وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَاوَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ [٧:٥٦]
পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।
“দুনিয়ায় শান্তিস্থাপনের পর তাতে বিপর্বয় ঘটাবে না।”
সূরা আরাফ ৫৬
· সন্ত্রাসী সকলের নিকটই ঘৃণিত। মহান আল্লাহও এদেরকে ঘৃণারচোখে দেখে তাদের উপর লা‘নাত করেছেন। এরশাদহয়েছে :
وَالَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِمِن بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يُوصَلَوَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ ۙ أُولَٰئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْسُوءُ الدَّارِ [١٣:٢٥]
এবং যারা আল্লাহর অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও পাকা-পোক্ত করার পর তা ভঙ্গ করে, আল্লাহ যে, সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন, তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, ওরা ঐ সমস্ত লোক যাদের জন্যে রয়েছে অভিসম্পাত এবং ওদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব।
সূরা রদ ২৫
· সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্বই মহান আল্লাহর কাম্য। মানব জাতিরচিরশত্র“ শয়তানের ফাঁদে পড়ে আনেকেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িয়েপড়ে। সে জন্য সন্ত্রাসীদের সংক্ষিপ্ত একটি পরিচয় তুলে ধরে আল্লাহ বলেন :
وَإِذَا تَوَلَّىٰ سَعَىٰ فِي الْأَرْضِلِيُفْسِدَ فِيهَا وَيُهْلِكَ الْحَرْثَ وَالنَّسْلَ ۗ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْفَسَادَ [٢:٢٠٥]
যখন ফিরে যায় তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না।
সূরা বাকারা ২০৫
· সন্ত্রাসী আল্লাহররহমত হতে বঞ্চিত। সন্ত্রাসে লিপ্ত থাকার দরুন যারা আল্লাহর কোপানলে নিপতিত হয়েছে তাদেরকথা উল্লেখ করে কুরআনে বলা হয়েছে :
فَأَكْثَرُوا فِيهَا الْفَسَادَ [٨٩:١٢]
অতঃপর সেখানে বিস্তর অশান্তি সৃষ্টি করেছিল।
فَصَبَّ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ سَوْطَعَذَابٍ [٨٩:١٣]
অতঃপর আপনার পালনকর্তা তাদেরকে শাস্তির কশাঘাত করলেন।
সূরা ফজ্র ১২-১৩
· সন্ত্রাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন :
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْوَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ ۚ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ الْمَسْجِدِالْحَرَامِ حَتَّىٰ يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ ۖ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ ۗ كَذَٰلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ [٢:١٩١]
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।
সূরা বাকারা ১৯১
· সন্ত্রাস সর্বগ্রাসী,সন্ত্রাসের ভয়াল ছোবল সকলকেই যন্ত্রণাক্লিষ্ট করে তোলে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন :
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَّا تُصِيبَنَّالَّذِينَ ظَلَمُوا مِنكُمْ خَاصَّةً ۖ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُالْعِقَابِ [٨:٢٥]
তোমরা এমন ফিতনাকে (সন্ত্রাস) ভয় কর যা বিশেষ করে তোমাদের মধ্যে যারা যালিমকেবল তাদেরকেই ক্লিষ্ট করবে না বরং জেনে রাখ যে, আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
· সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়েও নিজেদেরকে সমাজেশান্তি স্থাপনকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এদের সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে :
وَإِذَا قِيلَلَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ [٢:١١]
“তাদেরকে যখন বলা হয়, পৃথিবীতে অশান্তি (সন্ত্রাস) সৃষ্টিকর না; তারা বলে আমরাইতো শান্তি স্থাপনকারী।”
· পৃথিবীর বুকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিহার এবং উদ্ধতভাবেচলাফেরা হতে যারা নিজেদেরকে বিরত রেখেছে তাদের জন্য রয়েছে সু-সংবাদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
تِلْكَ الدَّارُالْآخِرَةُ نَجْعَلُهَا لِلَّذِينَ لَا يُرِيدُونَ عُلُوًّا فِي الْأَرْضِ وَلَافَسَادًا ۚ وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ [٢٨:٨٣] দেশ ও সমাজে শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ পরোপকারেরনির্দেশ দিয়েছেন এবং পৃথিবীর বুকে বিপর্যয় (সন্ত্রাস) সৃষ্টি না করার জন্য বলেছেন।এরশাদ হয়েছে :
وَابْتَغِ فِيمَاآتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآخِرَةَ ۖ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا ۖ وَأَحْسِن كَمَا أَحْسَنَ اللَّهُ إِلَيْكَ ۖ وَلَا تَبْغِ الْفَسَادَ فِي الْأَرْضِ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ [٢٨:٧٧]
আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন, তদ্বারা পরকালের গৃহ অনুসন্ধান কর, এবং ইহকাল থেকে তোমার অংশ ভূলে যেয়ো না। তুমি অনুগ্রহ কর, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ অনর্থ সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
· যারা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেবেড়ায় এবং দুনিয়ার বুকে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তাদের শাস্তির ধরন উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন:
إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَاللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوا أَوْيُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلَافٍ أَوْيُنفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ۚ ذَٰلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا ۖ وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌعَظِيمٌ [٥:٣٣]
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
· কুরআনুল কারীমে উল্লেখিত মাদয়ান শহরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডবৃদ্ধি পাওয়ায় আল্লাহ তাদের হিদায়াতের জন্য শোয়াইব (আ.)- কে প্রেরণ করেছিলেন। তাঁরকথা অমান্য করায় তাদেরকে ভূকম্পন দ্বারা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন- মহান আল্লাহ। বাসস্থানগুলোওধ্বংসলীলায় পরিণত হয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
وَإِلَىٰ مَدْيَنَأَخَاهُمْ شُعَيْبًا فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَارْجُوا الْيَوْمَالْآخِرَ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ [٢٩:٣٦]
فَكَذَّبُوهُفَأَخَذَتْهُمُ الرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا فِي دَارِهِمْ جَاثِمِينَ [٢٩:٣٧]
“আমি মাদয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভ্রাতা শোয়াইব (আ.)- কেপাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়! তোমার আল্লাহ ইবাদাত কর, শেষ দিবসেরভয় কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় (সন্ত্রাস) ঘটাবে না। কিন্তু তারা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপকরলো; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হলো: ফলে, তারা নিজগৃহে নতজানু অবস্থায়শেষ হয়ে গেল।”
ইসলামে ধর্ম গ্রহণে কোন জবরদস্তি নেই
কাউকে জোর পূর্বক মুসলমান বানানোর অনুমতি ইসলামে নেই।
لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۖ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ ۚ فَمَن يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنبِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىٰ لَا انفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ [٢:٢٥٦]
দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।
অমুসলিমদের সাথে সম্পর্ক ও সহঅবস্থান সম্পর্কে আল কুরআন :
لَّا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَلَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُم مِّن دِيَارِكُمْ أَنتَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ [٦٠:٨]
ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন।
ইসলামই পৃথিবীতে একমাত্র ধর্ম যা আপাময় জনসাধারণকে উপহার দিতে পারে একটি সন্ত্রাসমুক্তসমাজ, জাতি ও বিশ্ব।
Comments 0