এ আমার শরীরের শিরায় শিরায় যে প্রাণ
সেই প্রাণ ছুটেছে বিশ্ব দিগ্বিজয়ে।
স্নিগ্ধ জল মুগ্ধভাবে ধরছে তনুখানি
গ্রীবার কাছে নেচে উঠে করছে কানাকানি।
উড়ে উড়ে খোঁজ করি নিজের আলোকে
"ও ভাই বন্ধু হবে কি?"
তরঙ্গে তরঙ্গ উঠে হেসে হল কুটিকুটি----
"তোমারেই যেন বেসেছি ভালো শতরুপে শতবার,
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গেথেছে গীতহার।"
আবার ধীরেধীরে গেলে ফিরে আলসে, বললে হেসে---
"একদিন বহুপূর্বে নিকষে সোনার রেখা দিয়েছিল দেখা
এ যে ইতিহাস তোমার!"
সুদুরে বাজিছে বাঁশি।
মিলে যত সুরাসুর কৌতুহলে ভরপুর----
"তুমি কেন ঢালো এসে তারি মাঝে বিলাপ-উচ্ছ্বাস!"
উড়ে উড়ে খোঁজ করি নিজের আলোকে
"ও ভাই বন্ধু হবে কি?"
উত্তরিল-- " বারেক যে চলে যায় তারে তো কেউ না চায়
তবু তারে কর কেন এত মায়া!"
সন্ধ্যাকালে জলদের অন্তরালে লুকিয়ে ধরার পানে চাই।
কিছুতে ভ্রুক্ষেপ নাই! বললে হেসে----
"সমুদ্র আপনিই শুনে আপনার স্বর!"
নিশীথের অন্ধকারে পুরোনো ঘরের দ্বারে এসে পুণঃ ফিরে যাই!
আজি বসন্তের বায় এই সূর্যকরে এই পুস্পিত কানণে
"জীবন্ত হৃদয় মাঝে যদি স্হান পাই!
হবে কি বন্ধু ভাই?"
"কি জানি !" "কত কি আশে চলেছে চারপাশে
কত লোক কত সুখে-দুঃখে
সবাই তো ভুলে আছে কেউ হাসে -- কেউ নাচে
তুমি কেন দাঁড়াও সমুখে?"
আজিকে দুয়ার রুদ্ধ ভবনে ভবনে,
জনহীন পথ কাঁদিছে ক্ষুব্ধ পবনে।
দিনের সহস্র কন্ঠ ক্ষীণ হয়ে এল,
নোঙর ফেলেছে তারা সন্ধ্যার নির্জন ঘাটে এসে।
উর্ধ্ধে কালো আকাশের ফাঁকা।
বাতাস যাচ্ছে বয়ে ---- কৌতুহলে ভরপুর---------
"তুমি কেন রয়ে রয়ে তারি মাঝে ফেল দীর্ঘশ্বাস!"
বাদলা হাওয়ায় ললিত নৃত্যে আসে বইয়ের ছেড়া পাতা
সুধায়---
"সেথা হতে উঠে এস, চলেছো কোন্খানে!!
আমি তোমার বন্ধু হব, আমায় সঙ্গে নেবে কি!!"
-----------------কালের আবর্তনে সময়ের সাথে সাথে
স্বার্থপরতা- লোভ- সব কিছুর উর্ধ্বে
থেকে আজ যখন বন্ধু আর বন্ধুকে জড়িয়ে ধরেনা,
যখন তার একটু নীরবতা হৃদয়ে আঘাত হানে,
যখন গরম গরম এক চুমুক চায়ের কাপের সাথে
আর বলেনা "বন্ধু তোকে বড় ভালোবাসি"
-----------তখনও বই ই হয় শ্রেষ্ঠ বন্ধু!
Comments 1