ইংরেজি নাম : Mango
বৈজ্ঞানিক নাম : Mangifera indica
আম শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। পর্তুগিজে আমকে ম্যাংগা, ফরাসী ভাষায় ম্যাংন্ড এবঙ চিনদেশে ম্যাংকো নামে পরিচিত। আম প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কেননা আম অধিকাংশ মানুষের কাছে সুপ্রিয় পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। প্রত্যেক বাড়ীতে আর না হলেও একটি আম গাছ রয়েছে যা প্রাকৃতিক বৈচিত্রকে সমৃদ্ধ করে তুলছে। আম চাষের ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো।
আম ভারতীয় উপমহাদেশে এক প্রকার সুস্বাদু ফল। এ ফলের বিভিন্ন নাম রয়েছে। কাচা অবস্থায় এর রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় এর রং হয় হলুদ। আমের বিভিন্ন জাতের মধ্যে ফজলি, ল্যাংড়া,গোপালভোগ,খিরসা,অরুণা,অম্রপালি,মল্লিকা,সুবর্ণরেখা,মিশ্রিদানা,নিলাম্বরী,কালীভোগ,কাচামিঠা,আলফানসো,বারোমাসী,তোতাপূরী,কারাবাউ,কেউই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, প্রভূতি।
উদ্ভিদ তত্ত্ব :
আম গাছ চিরসবুজ ছত্রাকৃত্রির বৃক্ষ। এ গাছ আকারে মাছারি থেকে বড় আকারের হয়ে থাকে। সাধারত ৩৫-৪০ মি: লম্বা এবঙ সর্বোচ্চ ১০মি: ব্যসার্ধের হয়ে থাকে। এ গাছের কান্ড সরল, উন্নত এবঙ শাখায়িত। বাকল অমসৃণ ও ধুসর বর্ণের। আম পাতা চিরসবুজ, সরল, পর্যায়ক্রমিক, ১৩-৩৫ সে:মি: লম্বা এবং ৬-১৬ সে:মি: চওড়া হয়ে থাকে এবং বোটা নাতীদীর্ঘ। কচি পাতা অত্যন্ত কোমল, লালচে-গোলাপী রঙের বা ঘোর তাম্রবর্ণ।
আম গাছ দীর্ঘজীবী হাজার বছর ধরেও বাঁচতে পারে। মাঘ মাসে আমেরর ডালে মুকুল আসে। গোটা আম গাছ জুড়েই মুকুলে ভরে যায়। পুরুষ ও স্ত্রী উভয় ফুলই একই দেখা যায়। ফুল থেকে শুরু করে আম পাকা পর্যন্ত প্রায় ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগে।
আমের পুষ্টি উপাদান :
আম ভিটামিন সমৃদ্ধ ও মিনারেলে ভরপুর। আমের আহরোপযোগী অংশ ৭৪%। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে খাদ্য শক্তি রয়েছে ২৫০ কিলোজুল, জলীয় ৭৮.৫ গ্রাম, শর্করা ১৫.০; সুগার ১৩.৭ গ্রাম; আঁশ ১.৬ গ্রাম; স্নেহ ০.৩৮ গ্রাম; আমিষ .৮২ গ্রাম; ভিটামিন এ ৫৪ মি.গ্রাম; বিটা ক্যারোটিন ৬৪০ মি.গ্রাম; থায়ামিন ০.২৮ মি.গ্রাম রিবোফ্লবিন ০.০৩৮ মি.গ্রাম নিয়াসিন ০.৬৬৯মি.গ্রাম প্রভৃতি।
কাচা আমের পুষ্টি গুণ :
কাঁচা আম শরীরের রক্ত পরিস্কার, হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে, রক্তস্বল্পতা দূরীকরণ,গরমে ঠান্ডা জাতীয় রোগ প্রতিরোধে, কিডনি সমস্যা প্রতিরোধে, লিভার ভালো রাখা, স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি; নিঃশ্বাসের সমস্যা ও জ্বরের উপশম; এ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ, ত্বক উজ্জল করা, কোষ্টকাঠিন্য দূর করে। আমেরর ভেষজ গুণ ও আম কাঠের ব্যবহার কাচা আম হওয়ায় এ আম আচার ও সবজি হিসাবে অধিক ব্যবহার হয়। আমের পাতা ও বাকল থেকে রঞ্জক পদার্থ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। চোখের রোগ নিরাময়ে কাচা আম উপকারী। পাকা আম, রেচক, টনিক, এবঙ লিভার দোষে উপকারী । আম কাঠ উচ্চমানের কাঠ না হওয়ায় এ কাঠ বাড়ী নির্মাণ, শিল্প, প্যাকিং শিল্প ও জ্বালানী কাঠ হিসাবে অধিক ব্যবহার করা হয়। আম গাছ আমাদের সমাজের একটি অতিব প্রয়োজনীয় গাছ। বেশি বেশি করে গাছ লাগানো অভ্যাস করা আবশ্যক।
Comments 0