রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়
Topu
রাগ হওয়া স্বাভাবিক। আর রাগ হলে তা প্রকাশ করাটাও স্বাভাবিক। হাসি, কান্না, ঈর্ষার মতোই রাগ মানুষের প্রাকৃতিক আবেগ। যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি, যেখানে নিজের প্রতি অন্যায় হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখানে রাগ একেবারেই সহজাত একটি প্রতিক্রিয়া। তবে সমস্যাটা তখনই হয় যখন এই রাগ চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং তার প্রভাব পড়ে কাজকর্মে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর।নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো কাজ শেষ করার তাগিদ কিংবা বড় কোনো দায়িত্বের মারাত্মক চাপে আপনার মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। তবে এই রাগ থেকে আপনার ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের শিক্ষক জোসেফ শ্র্যান্ড:
রাগ শনাক্ত করুন:
নিজের রাগের মাত্রা সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। রাগান্বিত অবস্থায় আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে, তা জানতে সহকর্মী বা আশপাশের কাউকে জিজ্ঞেস করুন।
কল্পনা করুন আপনাকে নিয়ে অন্যদের ঈর্ষার কথা:
কেন আপনার রাগ হচ্ছে, ভেবে দেখুন। যদি কারও প্রতি ঈর্ষাই আপনার রাগের কারণ হয়, তাহলে কল্পনা করুন, সেই ব্যক্তিটিই আপনার প্রতি একই রকম ঈর্ষা বোধ করছে।
সন্দেহের অনুভূতি:
সন্দেহের অনুভূতি নিয়ে উদ্ভাবনীমূলকভাবে চিন্তা করুন যে আপনার ওপরও কেউ একজন প্রচণ্ড রেগে আছে। তাই এসব বাদ দিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করার উপায় তো বের করতেই হবে।
শান্তি প্রকল্প:
অন্যের কাছ থেকে যে রকম আচরণ প্রত্যাশা করেন, আপনি নিজেই সেটি করছেন না কেন? সুন্দর আচরণের মাধ্যমে সম্মিলিত কর্মপরিবেশ তৈরি করুন।
সহানুভূতি:
রাগ প্রশমিত হয়ে গেলে নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতি একধরনের সহানুভূতি হয়। সেটি ধরে রাখার চেষ্টা করুন।
স্পষ্ট আদান-প্রদান:
সহকর্মীসহ সবার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। ভাব বিনিময়ে স্পষ্টতা অবলম্বন করুন।
ব্যায়াম:
রাগ কমাতে ব্যায়ামের জুড়ি নেই। রাগ হলে শরীরে যে হরমোনগুলো নিঃসৃত হয়, ব্যায়াম করলে সেগুলো কমে যায়। যে অতিরিক্ত এনার্জি আপনার মধ্যে তৈরি হয়েছিল তা রিলিজ হয়ে যায়। পেশির টেনশন কমে যায়। শরীর-মন শান্ত হয়ে আসে। রাগের যে বিস্ফোরণটা হতে পারত সেটা আটকানো যায়। মেডিটেশন করলেও মনের ওপর ভালো প্রভাব পড়ে।
অনুভূতি লিখুন:
রাগ হলে ঠিক কী রকম মনে হয়, তা লিখে রাখুন। এ কাজের জন্য একটা ডায়েরি রাখতে পারেন। রোজ যে ঘটনাগুলোর কারণে আপনার মাথা গরম হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে রাখুন। আপনি যেভাবে প্রতিক্রিয়া করেছেন, সেগুলোও লিখে রাখুন। মাথা ঠাণ্ডা থাকলে একই পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া করতেন সেটা কল্পনা করার চেষ্টা করুন। এবার আপনার এই দুই ধরনের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে তুলনা করলেই আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল।
হিউমার:
রাগ কমাতে ‘হিউমার’ কিন্তু খুব ভালো কাজ করে। রাগ হলেই সাথে সাথে যদি কোনো মজার এসএমএস বা ইমেইল দেখে নেন, তাহলে কিন্তু রাগ কমতে বাধ্য। হাতে সময় পেলে হাসির বই পড়ুন বা সিনেমা দেখুন। দেখতে পারেন কার্টুনও।
আচরণে পরিবর্তন
নিজের আচরণ পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারেন। যদি দেখেন সবার সাথেই আপনার ঝামেলা হচ্ছে, কারো কোনো কথাই আপনি মেনে নিতে পারছেন না, তাহলে বুঝতে হবে আপনারই কোথাও ভুল হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো দরকার।
source:
http://cp24it.blogspot.com
Comments 12