চোখের অ্যালার্জি
চোখের অ্যালার্জি খুবই সাধারণ অসুখ, তবে ছোঁয়াচে নয়। অ্যালার্জিজনিত সমস্যা সাধারণত নির্মূল করা যায় না।
প্রতিরোধ করা যায়। তবে কাজটা কিছুটা কঠিন।
অ্যালার্জি কী?
অ্যালার্জি হচ্ছে শরীরের এক ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এখানে কোনো জিনিসের প্রতি শরীরের অতি সংবেদনশীলতা তৈরি হয়। যার ফলে ওই বস্তু বা জিনিস শরীরের সংস্পর্শে এলেই অতি দ্রুত লাল হয়ে যায়, চুলকায়, ফুলে যায়, পানি পড়ে ইত্যাদি। এটাই চোখের অ্যালার্জি।
কী দিয়ে অ্যালার্জি হয়?
সেসব পদার্থ দিয়ে অ্যালার্জি হয় তাদের বলা হয় অ্যালার্জেন। এদের মধ্যে আছে কিছু খাবার। যেমন—ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, গরুর মাংস, ডিম, পালংশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি। আবার প্রসাধন সামগ্রীতেও অ্যালার্জি হতে পারে। অনেকের ওষুধ ও বাতাসে ঘুরে বেড়ানো রেণু, ধুলাবালি, পোকামাকড়েও অ্যালার্জি হয়।
অ্যালার্জির ধরন
অ্যালার্জি হতে পারে ছয় ধরনের। ঋতুজনিত কনজাংটিভাইটিস, পেরিনিয়াল কনজাংটিভাইটিস, ভার্নাল কেরাটো কনজাংটিভাইটিস, অ্যাটপিক, জায়ান্ট প্যাপিলারি, কন্ট্যাক্ট অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস।
উপসর্গ
দুই চোখে প্রায় একই সময় শুরু হয় এবং একই রকম উপসর্গ দেখা যায়। সাধারণ কোনো অ্যালার্জেন যেমন—খাবার। প্রসাধনী লাগানো অথবা অন্য কিছুর সংস্পর্শে আসার পর পর শুরু হবে। একই রকম ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে। লক্ষণের মধ্যে আছে—
► অতিরিক্ত চুলকানো
► চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া
► চোখ দিয়ে পানি পড়া
► মনে হবে চোখে কিছু একটা পড়ে আছে
► আলো সহ্য করতে না পাড়া
► চোখে সুতার মতো লম্বা ময়লা জমা হওয়া
► দৃষ্টি কমে যাওয়া
► হাঁচি ও কাশি হওয়া
► সর্দি ঝরা।
কাদের অ্যালার্জি হয়?
যাদের হাঁপানি, চর্মরোগ সর্দিজ্বর ইত্যাদি থাকে তাদের চোখের অ্যালার্জি বেশি হয়।
চোখের কোনো কোনো অসুখও চোখের অ্যালার্জি বলে মনে হতে পারে। যেমন—চোখ ওঠা, আঘাতজনিত চোখের প্রদাহ, চোখে কোনো জিনিস পড়ে আটকে থাকলে।
চিকিত্সা
অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময় সম্ভব হয়, তবে কাজটি কঠিন। অ্যালার্জি হলে অ্যান্টি হিস্টামিন গোত্রের ড্রপ ব্যবহার করতে হয়। কখনো কখনো চোখে ব্যথা অনুভূত হলে ব্যথানাশকও সেবন করতে হতে পারে।
প্রতিরোধ
► অ্যালার্জিক জাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকা
► ঠাণ্ডা সেঁক দেওয়া
► রোদচশমা ব্যবহার করা।
মনে রাখতে হবে, চোখের অ্যালার্জি রোগটা সাধারণত নির্মূল হয় না। প্রতিরোধ করা যায়। কিছু কিছু যেমন ভার্নাল কনজাংটিভাইটিস কিশোর বয়সে ভালো হয়ে যেতে পারে। তত দিন নিয়মিত চিকিত্সা নিতে হয়।
ডা. সাইফুল আলম
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
Comments 2